Type Here to Get Search Results !

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে ২৮০০ কোটি টাকা চেয়েছে ইসি

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে ২৮০০ কোটি টাকা চেয়েছে ইসি

বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন পরিচালনা ও আইনশৃঙ্খলা খাতে প্রায় ২ হাজার ৮০০ কোটি চেয়েছে নির্বাচন কমিশন। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্যও প্রায় সমান বরাদ্দ চেয়েছে কমিশন। সরকারের কাছে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বরাদ্দ চেয়ে প্রস্তাব পাঠানোর কথা বলেছেন নির্বাচন কমিশন-ইসি সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ।

বুধবার তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, “আমরা সরকারের কাছে ২ হাজার ৭৯৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা চেয়েছি সংসদ নির্বাচনের জন্য। আমাদের এটা প্রাথমিক চাহিদা থাকলেও তা যাচাই-বাছাই করা হবে এবং ইসি সচিবালয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর পূর্ণাঙ্গ একটা পরিমাণ চূড়ান্ত হবে।”

চলতি বছরের শেষ বা আগামী বছরের প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন সরকারপ্রধান। ইসি বলছে, সরকারপ্রধানের পরিকল্পনা ধরে তারা ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে ২ হাজার ২৭৬ কোটি টাকার ব্যয় ব্যয় ধরা হয়েছিল। এরমধ্যে হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয় ধরা হয়েছিল আইনশৃঙ্খলা খাতে।

এর আগে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ সংসদ নির্বাচনে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭০০ কোটি টাকা।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের দুই বছরের মাথায় হতে যাওয়া ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য আগের বারের চেয়ে অন্তত ৫০০ কোটি টাকা ব্যয় বেশি ধরা হচ্ছে। 

ইসির অতিক্তি সচিব বলেন, ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা সংসদ নির্বাচনের জন্য চাহিদা দিলেও তা কমে আসতে পারে। সবকিছু ভোটের সময়কার পরিস্থিতির উপর নির্ভর করবে। ইসি সচিবালয়ের সঙ্গে বৈঠকের পরই সম্ভাব্য ব্যয়ের সঠিক পরিসংখ্যা পাওয়া যাবে।

স্থানীয় নির্বাচনের জন্য ৩ হাজার কোটি টাকা

জাতীয় নির্বাচনের অগ্রাধিকারের মধ্যে স্থানীয় নির্বাচনের জন্যও প্রায় সমান অর্থ বরাদ্দ চেয়েছে নির্বাচন কমিশন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের স্থানীয় সরকারের ভোট করার বিষয়ে ইতোমধ্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত না হলেও আর্থিক বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।

ইসির অতিরিক্ত সচিব বলেন, “জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য আরও খাত রয়েছে।”

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে যত চায় ইসি

আগামী জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে ইসি।

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকারের অন্যান্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ৫ হাজার ৯২১ কোটি ৭২ লাখ ৬০ হাজার টাকা চেয়েছে নির্বাচন কমিশন। এক্ষেত্রে কমিশনের ঘাটতি আছে ৫ হাজার ৮৫৩ কোটি টাকা।

এছাড়া ২০২৬-২৭ অর্থবছরের জন্য ২ হাজার ৮২৯ কোটি ৪৫ লাখ ৯৭ হাজার টাকা এবং ২০২৭-২৮ অর্থবছরে ৭২৪ কোটি ৩ লাখ ৩৭ হাজার টাকা চেয়েছে কমিশন।

ভোটার তালিকা প্রস্তুত কার্যক্রম, জাতীয় পরিচয়পত্র মুদ্রণ ও বিতরণ, নির্বাচন ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ভোটার তালিকা খাতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৬৯ কোটি ২৫ লাখ ০৫ হাজার টাকা। ২০২৬-২৭ অর্থবছরে ৭০ কোটি ৬৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা এবং ২০২৭-২৮ অর্থবছরে ৭৩ কোটি ৪৪ লাখ ১৬ হাজার টাকার সংস্থান রাখার কথা বলেছে নির্বাচন কমিশন।

জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের বাজেটে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৭০ কোটি ৮০ লাখ ১০ হাজার, ২০২৬-২৭ অর্থবছরে ৩৩ কোটি ৫৮ লাখ ৭১ হাজার এবং ২০২৭-২৮ অর্থবছরে ৪০ কোটি ৭৯ লাখ ৪৭ হাজার টাকায় সংস্থান রাখা হলো।

আগের ১২ নির্বাচনের যত ব্যয়

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন: ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় ২ হাজার ২৭৬ কোটি ২২ লাখ টাকা। এর মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চাহিদা অনুযায়ী সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ২২৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা। নির্বাচন পরিচালনা খাতে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৫০ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: ২০১৮ সালে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা ও নির্বাচন পরিচালনার জন্য মোট ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। পরে তা আরও বেড়েছিল।

দশম সংসদ নির্বাচন: ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ভোটে মোট ব্যয় হয়েছিল প্রায় ২৬৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে নির্বাচন পরিচালনায় ৮১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পেছনে ব্যয় হয় ১৮৩ কোটি টাকা।

এ নির্বাচনে ১৪৭ আসনে ভোট হয়, ১৫৩ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন একক প্রার্থীরা। অর্ধেক এলাকায় ভোট করতে হওয়ায় বরাদ্দের তুলনায় খরচ অনেক কমে আসে।

নবম সংসদ নির্বাচন: ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের ভোটে ১৬৫ কোটি টাকা ব্যয় হয়; সে নির্বাচনে ভোটার ছিল ৮ কোটি ১০ লাখের বেশি।

উপকরণ ও ব্যবস্থাপনাসহ সব খাতে ব্যয় বাড়ার কারণে আগের নির্বাচনের তুলনায় বরাদ্দ বাড়ে দ্বিগুণের বেশি।

অষ্টম সংসদ নির্বাচন: ২০০১ সালে হওয়া এ নির্বাচনে মোট ব্যয় হয় ৭২ কোটি ৭১ লাখ টাকা।

সপ্তম সংসদ নির্বাচন: ১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত এই নির্বাচন পরিচালনা বাবদ ব্যয় ১১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।

ষষ্ঠ জাতীয় নির্বাচন: ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি আয়োজন করা এই নির্বাচনে মোট ৩৭ কোটি টাকা খরচ হয়।

পঞ্চম সংসদ নির্বাচন: ১৯৯১ সালে দেশে অনুষ্ঠিত এই সংসদ নির্বাচন পরিচালনা ও আইনশৃঙ্খলা খাতে ব্যয় হয় ২৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।

চতুর্থ সংসদ নির্বাচন: ১৯৮৮ সালের এই জাতীয় নির্বাচনে ৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছিল।

তৃতীয় সংসদ নির্বাচন: ১৯৮৬ সালে হওয়া এই সংসদ নির্বাচনে ব্যয় হয় ৫ কোটি ১৬ লাখ টাকা।

দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচন: ১৯৭৯ সালে অনুষ্ঠিত এই সংসদ নির্বাচনে ব্যয় হয় ২ কোটি ৫২ লাখ টাকা।

প্রথম সংসদ নির্বাচন: ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ ৩ কোটি ৫২ লাখ ৫ হাজার ৬৪২ জন ভোটারের এ নির্বাচনে ব্যয় ছিল ৮১ লাখ ৩৬ হাজার টাকা।

সূত্র: বিডিনিউজ।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি

© Bangladesh Journal


from BD-JOURNAL https://www.bd-journal.com/bangladesh/284291/ত্রয়োদশ-সংসদ-নির্বাচনে-২৮০০-কোটি-টাকা-চেয়েছে-ইসি

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.